ব্রিটেনে ঈদুল আজহার দিনেও লক্ষাধিক বাংলাদেশি রেস্তোরাঁকর্মীকে ছুটি দেওয়া হয় না। নামাজের সময় বাদে পুরো দিন কাজ করতে হয় এবং এই বিশেষ কাজ করার জন্য কোনও অতিরিক্ত সুবিধাও দেওয়া হয় না।

রেস্তোরাঁ মালিকরা বাংলাদেশি হলেও স্বদেশি কর্মীদের ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত করছেন তারা। সরকারি ছুটি না থাকাকে কারণ দেখিয়ে ঈদের দিন কাজ করানো হয় এসব কর্মীদের। রেস্তোরাকর্মীদের দাবি, অন্তত দুই ঈদে তাদের ছুটি দেওয়া হোক।

বিভিন্ন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ব্রিটেনে বাংলাদেশি মালিকানাধীন রেস্তোরাঁ ও টেকওয়ের সংখ্যা ১০ হাজারের মতো।

জানা গেছে, লক্ষাধিক বাংলাদেশিকর্মী রয়েছেন এই সেক্টরে। বেশিরভাগ রেস্তোরাঁ মালিক বাংলাদেশি হলেও ব্যবসা কমে যাওয়ার অজুহাতে ঈদের দিনেও তা খোলা রাখায় কাজে যেতে বাধ্য হন কর্মীরা।

এজন্য ওভারটাইম কিংবা অন্য কোনও সুবিধাও দেওয়া হয় না। রেস্তোরাঁ মালিকদের সংগঠনগুলো এ বিষয়ে নিশ্চুপ, কর্মীদের তো অধিকার আদায়ের বা সম্মিলিতভাবে কথা বলার কোনও সংগঠনই নেই।

এ নিয়ে কয়েক বছর ধরে বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন সংগঠন ঈদের দিনে কর্মীদের ছুটির দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি দিলেও পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি। তবে কিছু মালিক ঈদের দিনে স্বেচ্ছায় রেস্তোরাঁর বন্ধ রাখছেন বহু বছর ধরে।

খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী মানুষের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিনে প্রতি বছর ব্রিটেনে বাংলাদেশি মালিকানাধীন ৯৫ ভাগ রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু একই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর ৯৮ ভাগ স্বত্বাধিকারী ও কর্মী মুসলমান ধর্মাবলম্বী।

ঈদের দিন রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখলে ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে–এই শঙ্কায় তা খোলা রাখা হয়। ফলে রেস্তোরাঁ শিল্পের সঙ্গে জড়িত বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি ঈদের দিন তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আনন্দ উদযাপনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন।

ইউকে-বাংলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও প্রথম আলোর যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ২০১৩ সালের ৮ আগস্ট ঈদুল ফিতরের দিন ইস্ট লন্ডন মসজিদের সামনে ঈদের দিন ব্রিটেনে রেস্তোরাঁ কর্মীদের ছুটির দাবিতে মানববন্ধন করে ফ্রেন্ডস হেল্পিং সোসাইটি নামের একটি সামাজিক সংগঠন।

এর আগে বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংগঠন কথা বললেও এটি ছিল ঈদের ছুটির দাবিতে প্রথম কোনও আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি। ওই মানববন্ধনে কারি লাইফের সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ নাহাস পাশা উপস্থিত হয়ে একাত্মতা পোষণ করেছিলেন।

ব্রিটেনে বাংলাদেশি রেস্তোরাঁ মালিক সংগঠনের নেতা ফরহাদ হোসেন টিপু বলেন, ব্রিটেনে ঈদের দিন সরকারি ছুটি নেই। দিনটিকে সরকারি ছুটি ঘোষণার জন্য কয়েক বছর ধরে চেষ্টা চলমান রয়েছে। সেই দাবি বাস্তবায়িত হলে দিনটিতে রেস্তোরাঁ মালিকরাও কর্মীদের ছুটি দিতে বাধ্য হবেন।

মা নিয়ে উক্তি