গাজা থেকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে কোনোভাবেই উৎখাত করছে পারছে না ইসরায়েল। তবে এবার ভিন্ন এক জায়গা থেকে সংগঠনটিকে চেপে ধরতে চাইছে ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। কাতারভিত্তিক হামাসের রাজনৈতিক অফিস নিয়ে নতুন এক চক্রান্তের নীলনকশায় মেতে উঠেছে দেশটি। নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাতারকেও দলে ভিড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার (০৪ মে) ওয়াশিংটন পোস্টের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষপর্যায় থেকে এমন চাপ আসার পর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে কাতার। যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হলে জোরপূর্বক দেশত্যাগে বাধ্য করা হতে পারে বলে কাতারের পক্ষ থেকে হামাসের নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনজন সিনিয়র কর্মকর্তার বরাতে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাতার কয়েক মাস ধরেই হামাসের শীর্ষ নেতাদের দেশটি থেকে বের করে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

আরও পড়ুন জীবন নিয়ে বিখ্যাত ১০০ উক্তি

তবে শুধু দেশ থেকে বহিষ্কারই নয় কাতারে হামাসের রাজনৈতিক অফিসও বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। কাতার সরকারের এমন পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগত একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। বিগত বছরগুলোতে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘাতে কাতারকে মধ্যস্থতা করতে দেখা গেছে। তবে গাজায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আগ্রাসনে কাতার অনেকটা নিস্পৃহ ভূমিকা বজায় রেখেছে।

গেল মাসে কাতার জানায়, তারা ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এই পরোক্ষ আলোচনায় মধ্যস্থতার ভূমিকা থেকে সরে আসতে পারে। রাজনীতিকরা নিজেদের ফায়দা লাভের আশায় কাতারের ভূমিকাকে খাটো করে দেখছে, এমন উদ্বেগ থেকেই নিজেদের অবস্থান পুনর্বিবেচনার কথা জানায় দোহা।

গাজার চেহারা বদলে দিতে মরিয়া নেতানিয়াহু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, কাতার যদি মধ্যস্থতার ভূমিকা থেকে সরে আসে তাহলে হামাসের রাজনৈতিক অফিস দেশটিতে রাখার কোনো মানে নেই।

বাইডেন প্রশাসনের আশা, হামাসের নেতাদের কাতার থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিতে রাজনৈতিক ফায়দা হতে পারে। তবে ওয়াশিংটন পোস্টকে বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে আলোচনা প্রক্রিয়া আরও জটিল হবে। কেননা দোহায় হামাসের অফিস থাকা না থাকায় কিছু যায় আসে না। কারণ গাজায় বসে যারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তাদের কাছে হামাসের অফিস কোথায় থাকবে তা কোনো বিষয় নয়।

ঠিক একই ধরনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কাতারের সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিক থিওরোস। তার বিশ্বাস, কাতার থেকে হামাসকে বের করে দেওয়া হোয়াইট হাউসের জন্য একটি দুঃস্বপ্ন হবে। এর ফলে ভবিষ্যত আলোচনার রাস্তাও বন্ধ হয়ে যাবে। এদিকে যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে হামাসের চেয়ে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের অনাগ্রহ বেশি বলে দাবি করেছেন গ্রুপটির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা হুসাম বাদরান। তার ভাষায়, যুদ্ধ বন্ধের ব্যাপারে আমাদেরই আগ্রহ বেশি।