মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব যখন ধীরে ধীরে মুসলিম সংস্কৃতি ছেড়ে পশ্চিমা সংস্কৃতির দিকে ধাবিত হচ্ছে, তখন উল্টো পথে হাঁটছে সে অঞ্চলেরই আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ কুয়েত। তারা সম্প্রতি দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সহশিক্ষা নিষিদ্ধ করেছে। খবর গালফ নিউজ ও সিয়াসাত ডেইলি।
নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার আগে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দেশটির সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সহশিক্ষায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা এখন থেকে আর একই ক্লাসে বসতে পারবে না। কুয়েতের শিক্ষামন্ত্রী আদেল আল মানেকের উদ্ধৃতি দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন এমপি মোহাম্মদ হানিফ। ১৯৯৬ সালের একটি আইন বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে একই ক্লাসে ছাত্র ও ছাত্রী এই সহাবস্থান নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হচ্ছে।
তবে ১৯৯৬ সালের ওই আইনের পর ২০১৫ সালে কুয়েতের সাংবিধানিক আদালত সহশিক্ষার পক্ষে রায় দিয়েছিল। শর্তসাপেক্ষে দেওয়া সেই রায়ে বলা হয়েছিল, ছাত্র-ছাত্রীরা উভয়ে একত্রে ক্লাস করতে পারবে। তবে কেউ কারও পাশাপাশি বসতে পারবে না। তাদের বসার জায়গা পৃথক হবে। সম্প্রতি সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সহশিক্ষা পদ্ধতি বাতিল করা হয়। একইসঙ্গে ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের হিজাব ও বোরকা পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং ট্যাটুতেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
সাম্প্রতিক এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কুয়েত ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ফায়েজ আল ধাফিরি বলেন, সহশিক্ষা বাতিল করায় কোনো সমস্যা নেই। ব্যতিক্রমী ও বাস্তব কোনো প্রয়োজন দেখা না দিলে সহশিক্ষার তেমন কোনো দরকার নেই বলেই আমি মনে করি।
এদিকে সহশিক্ষা বিষয়ে এমন সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন সাংবিধানিক আদালত ও কিছু সমাজকর্মী। তারা বিষয়টিকে ‘পূর্বে সমাধান করা একটি ইস্যুতে জঙ্গিবাদের কাছে সরকারের অহেতুক মাথা নত হওয়া’ বলে অভিহিত করেছেন। তারা বলেন, এই সিদ্ধান্ত ব্যক্তিস্বাধীনতা হরণের সমকক্ষ।
সহশিক্ষা বন্ধ করার সিদ্ধান্তটি একেবারেই অপ্রয়োজনীয় বলে উল্লেখ করে প্রশাসনিক আদালতে মামলা দায়েরের পরিকল্পনা করছে ল কলেজ স্টুডেন্টস সোসাইটি।