বাংলাদেশে সোনা চো;রাচালানের একটি বড় অংশ আসে বিমানযোগে। আর এর প্রধান রুট হলো রাজধানী ঢাকার হযরত শাহ্জালাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট।

দেশের আ;ইনশৃঙ্খলা বা;হিনীর কড়া নজরদারি সত্ত্বেও এই রুট দিয়ে চোরাকারবারিরা নিয়মিত সোনা চো;রাচালান করে নিয়ে আসছে। ১৫টি চক্র এই রুটে সোনা চো;রাচালান করে। এমন একটি চক্রের মূল হোতা হচ্ছেন মো. জুয়েল।

গত ৬ বছরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে ২ মণ সোনা চো;রাচালান করে দেশে নিয়ে এসেছেন। এই সোনার বাজার দাম প্রায় ৯০ কোটি টাকা। গত ৬ বছরে তিনি ৭০ বার দুবাই গেছেন সোনা কিনতে। দীর্ঘদিন সোনা চো;রাচালান করার কারণে দেশে এবং দুবাইয়ে তার বড় নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে।

জুয়েল শুধু ঢাকার শাহ্জালাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট নয়, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের স্বর্ণ পাচারে সহযোগিতা নিয়েছেন। এই সব অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তিনি মোটা অংকের টাকা দিতেন যাতে তার স্বর্ণ চোরাচালানে সহযোগিতা করে। তার এই কর্মকাণ্ডে কয়েকজন ইমিগ্রেশন পু;লিশেরও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

জুয়েলকে আটকের সময় বিমানবন্দরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সার্ভিস বিভাগের কর্মী আমজাদ হোসেনকেও আ;ট;ক করা হয়েছে। জুয়েল দুবাই থেকে স্বর্ণ এনে আমজাদের কাছে হস্তান্তর করছিলেন।

এ সময় বিমানবন্দর আ;র্ম;ড পু;লি’শ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের দুইজনকে আ;ট’ক করেন। বিমানবন্দরের কর্মী আমজাদ দীর্ঘদিন ধরে স্বর্ণ চো;রাচালানের সঙ্গে যুক্ত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আর্মড পু;লিশ ব্যাটালিয়নের সিনিয়র এএসপি জিয়াউল হক জানান, ‘স্বর্ণ চো;রাচালানের কারণে জুয়েলকে দুবাই থেকে ঢাকা বিমাববন্দরে আসা এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট থেকে নামার পর গ্রে;প্তা;র করা হয়। তাকে সহযোগিতার জন্য বিমানবন্দরের হেল্পলাইন সার্ভিসের কর্মী আমজাদ হোসেনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় মামলা হয়েছে।

মামলার তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, জুয়েলের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকায়। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে তিনি দুবাইয়ে যান। তিনি গত ৬ বছরে দুবাইয়ে ৭০ বার যাতায়াত করেছেন। গত ১৫ই জানুয়ারি তিনি দুবাই থেকে স্বর্ণ নিয়ে ঢাকা বিমানবন্দরে আসেন।

প্রায় ১ কেজি ৯৫৫ গ্রামের স্বর্ণ কৌশলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বেসরকারি কোম্পানি হেল্পলাইন সার্ভিসের কর্মী আমজাদ হোসেনের কাছে হস্তান্তর করার সময় পুলিশ তাকে হাতেনাতে ধ;রে ফেলে। ওই স্বর্ণের বাজারদর ২ কোটি টাকা। স্বর্ণগুলো তিনি পাওয়ার ব্যাংকের ভেতরে লু’কি’য়ে আনছিলেন।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জুয়েল জানিয়েছেন, এর আগেও তিনি এবং তার সহযোগীরা একই পদ্ধতিতে স্বর্ণ চো;রাচালান করেছেন। দুবাইয়ে অবস্থানরত বাংলাদেশি কবির, সেলিম, সোহেল, আরমান এবং বাবু তাকে এসব স্বর্ণ দিয়েছেন।

ওই স্বর্ণগুলো তার আগে থেকেই কিনে রাখে। ওই দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমে গেলে তারা সেখান থেকে স্বর্ণগুলো কিনে মজুত করে রাখে। পরে তারা সিগন্যাল দিলে তিনি সেখান থেকে স্বর্ণগুলো নিয়ে আসেন।

সূত্র জানায়, তিনি নিজেও ওই পা;চা’রে’র সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও কিছু পাচারকারী আছে তাদেরও স্বর্ণ তিনি দুবাই থেকে এনে দেন। এতে তিনি মোটা অংকের টাকা পান।

সূত্র জানায়, আমজাদও একটি কমিশন পান এ চক্রের কাছ থেকে। এক সপ্তাহ আগেও একটি চোরাচালানে সহযোগিতা করায় আমজাদ ২০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন জুয়েলের কাছ থেকে। এ চ;’ক্রে আরও ১৫ জনের নাম পেয়েছে পুলিশ।

সূত্র জানায়, জুয়েল পুলিশকে জানিয়েছে যে, ওই স্বর্ণগুলো একটি কার্গো ফ্লাইটে আসার কথা ছিল। এক বিমানের কর্মী সেখানে সহযোগিতার জন্য তার কাছে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু, ওই বিমানের কর্মীর ১৫ই জানুয়ারি কোনো ফ্লাইট না থাকার কারণে তিনি নিজেই বহন করছিলেন। গ্রিন চ্যানেল পার হওয়ার পর তাকে পুলিশ গ্রে;প্তা’র করে।

সূত্র জানায়, ধূর্ত প্রকৃতির জুয়েল ইমিগ্রেশনের আগেই একটি পাওয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে বিমানবন্দরের কর্মী আমজাদকে হন্তান্তর করে। কিন্তু সেটি সিসি ক্যামেরায় ধ;রা পড়ে। পরে দু’জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। সূত্রঃ মানব জমিন